রোজা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশীলন নয় স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত ভালো

  • আপডেট সময় : রবিবার, মার্চ ২, ২০২৫
  • 9 পাঠক

রোজা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশীলন নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী—এ কথা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত। দীর্ঘ সময় উপবাস থাকার ফলে শরীরের বিপাকীয় কার্যক্রমে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। ইসলাম ধর্মের প্রতিটি বিধান মানবকল্যাণে নিবেদিত, যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর সুফল সম্পর্কে আমরা অবগত নই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে রোজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে, দেহের বিপাকীয় কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনার মাধ্যমে এটি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো জটিল সমস্যাগুলোর ঝুঁকি কমায়। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা গবেষকরা রোজার উপকারিতা নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং এর স্বাস্থ্যকর দিকগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। জাপানি চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমি তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, রোজার ফলে শরীরে ‘অটোফেজি’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

রোজার উপকারিতা

১. চর্বি কমানো: রোজা রাখলে শরীর সংরক্ষিত গ্লাইকোজেন ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যে ফুরিয়ে গেলে চর্বি পোড়ানো শুরু করে। এটি হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ানো, রক্তচাপ ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং পেটের চর্বি কমাতে সহায়তা করে।

২. পেটের স্বাস্থ্য রক্ষা: রোজা পেটের উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।

৩. ওজন কমানো: বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পরিচালিত ৩৫টি গবেষণায় দেখা গেছে, রমজান শেষে গড়ে ১ থেকে ১.৫ কেজি ওজন কমে।

৪. রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: তুরস্কসহ ১৬টি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, রোজা রক্তে সুগারের মাত্রা স্থিতিশীল রাখে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

৫. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও বাহরাইনের ৯১টি গবেষণা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রোজা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।

৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ২০১৯ সালে লন্ডনের পাঁচটি মসজিদে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, রমজানে সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার গড়ে সাত মিলিমিটার মার্কারি এবং ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেসার তিন মিলিমিটার মার্কারি কমে।

রোজা শুধুমাত্র আত্মশুদ্ধি ও ধর্মীয় অনুশীলনই নয়, এটি শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তির জন্যও অত্যন্ত উপকারী। বিজ্ঞান ও ইসলাম উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই রোজার গুরুত্ব অনস্বীকার্য, যা মানুষের সুস্থ, সচেতন ও সংযমী জীবনযাপনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমে শেয়ার করুন...

এ বিভাগের আরো খবর....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *