নোয়াখালী প্রতিনিধি-
নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী বাজারে অবস্থিত রওনক আবাসিক হোটেলে কথিত প্রেমিক মো.শরীফুল ইসলাম নূরের হাতে কিশোরী (১৬) ধর্ষিত হয়।
গত ২৭ জুন রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় সোনাইমুড়ীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রেমিক শরীফুল ইসলাম নুর ও হোটেল ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় গত ২৭ জুন রাতে নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামী করে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, পার্শবর্তী চাটখিল উপজেলার ৫নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া রমজান আলী মিজি বাড়ির আলী আকবরের ছেলে মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম নূর (২৬), সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ভানুয়াই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হোটেল ম্যানেজার ও শরীফের বন্ধু দীন মোহাম্মদ জনি (৩২)।
মামলা ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম কিশোরী (১৬) চাটখিল উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। কথিত প্রেমিক মো.শরিফুল ইসলাম নূর (২৬) কিছু দিন পূর্বে ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব সহ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি ভিকটিম তাহার পরিবারের সদস্যদের জানালে পরিবারের লোকজন তাকে সতর্ক করে।
ধর্ষিত কিশোরী গত রোববার সকালে নিজ বাড়ী থেকে চাটখিলের একটি স্কুলে এসে এসাইনমেন্ট জমা দিয়ে পুনরায় বাড়ী ফেরার পথে নুর কিশোরীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চাটখিল পৌরসভাধীন উপজেলা গেইটের সামনে নিয়া আসে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শরীফ ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ভিকটিমকে ফুসলিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক সোনাইমুড়ী থানাধীন রওনক আবাসিক হোটেলে নিয়া আসে। আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার দ্বীন মোহাম্মদ জনির সহায়তায় হোটেলের ৫ম তলার ৫০৮ নং কক্ষের ভিতরে নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ভিকটিমের প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে হোটেল ম্যানেজার দ্বীন মোহাম্মদ ও অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহযোগীতায় শরীফ ভিকটিমকে দুপুর দেড়টার দিকে সোনাইমুড়ীর আল খিদমাহ জরুরী সেবা ও নরমাল ডেলিভারী হসপিটাল ভর্তি করে।
ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজন ঘটনার বিষয়ে জানতে পেয়ে আল খিদমাহ জরুরী সেবা ও নরমাল ডেলিভারী হসপিটাল”এসে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দেখতে পায়। ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত আসামীরা কৌশলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। ভিকটিম বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় নোয়াখালী সদর জেনারেল হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ কথিত প্রেমিক ও হোটেল ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ওই মামলায় বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
সোমবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান,”আমরা ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি তাদের উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তারা নিজেরাই সেখানে ইচ্ছে করে এসেছে। যেহেতু ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে এবং পুলিশ আসামীকে আটক করেছে সুতরাং তদন্ত করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
Leave a Reply