ছবি: ইন্টারনেট
ঈদের পর সর্বনিম্ন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। সুস্থ হয়েছেন শনাক্তের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ। সেই সঙ্গে কমেছে শনাক্তের হার। তবে বেড়েছে মৃত্যুর হার। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে করোনাভাইরাস বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দ্রুত রূপ বদলাচ্ছে বলে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)-এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তনের হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ, যেখানে বিশ্বে এই পরিবর্তনের হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৩৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৫৯২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা গত ঈদের পর সর্বনিম্ন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪২৩ জন, যা শনাক্তের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৫৬ জন করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয় গত ৩ আগস্ট। ঈদের ছুটির কারণে ওই ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় মাত্র ৪ হাজার ২৪৯টি। শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ। এরপর গতকালই প্রথম দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা দেড় হাজারের ঘরে নেমে আসল। সেই সঙ্গে কমেছে শনাক্তের হার, যা গত সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৪ হাজার ৪৭৯ জনের। মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ১৫৭ জনের। মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর আগের দিন পর্যন্ত সুস্থতার হার ছিল ৬৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ২৫ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। ২৯ জন হাসপাতালে ও ৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৭ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন ও ২ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে ১৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন করে খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন সিলেট বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের এবং ১ জন করে রংপুর ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। করোনা দ্রুত রূপ বদলাচ্ছে বাংলাদেশে : মহামারী করোনাভাইরাসের রূপ বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে বলে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)-এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তনের হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ, যেখানে বিশ্বে এই পরিবর্তনের হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। বিসিএসআইআর’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৭ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগ থেকে সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ডাটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোভাক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, আমেরিকান প্রতিষ্ঠান মডার্না, দ্য ইউনির্ভাসিটি ও অক্সফোর্ডসহ কভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা ৫০টি প্রতিষ্ঠানে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। গবেষণাটি বাংলাদেশে কভিড-১৯ উপযোগী ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা করবে এবং বিসিএসআইআর তার অংশীদার হওয়ার গৌরব অর্জন করবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ এবং ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
Leave a Reply