নোয়াখালী অফিস –

অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে স্হানীয় কয়েক জন পাষন্ড যুবক।
ঘটনাটি গত ২ সেপ্টেম্বরের হলেও তা এক মাস পর সেপ্টেম্বর রবিবার ঘটনাটির একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অভিযোগ উঠেছে, ভিডিওতে যারা ওই নারীকে নির্যাতন করছে তারা স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা।

স্থানীয়রা বলছে, গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে, এক দল উঠতি বয়সের কয়েক জন যুবক ওই নারীকে মারধর করে জোর পূর্বক পরনের কাপড় খুলে ফেলতে বাধ্য করে। নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টার পাশাপাশি ঐ নারী বার বার তাদের বাবা ডেকে নির্যাতন না করার আকুতি জানান।

বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নে এই ঘটনায় নির্যাতিত নারীর সাবেক স্বামী গোপনে তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। এর পরই স্হানীয় কয়েকজন যুবক অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে।

নারীকে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হলে নোয়াখালী জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ রোববার বিকেল ৪ টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অভিযুক্ত এক যুবককে আটক করে আটককৃত, আব্দুর রহীম (২৭) একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের হাড়িধন বাড়ির বাসিন্দা।
অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার সেই নারী ও তার পরিবার সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে চলে গেছেন।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, তিন বছর আগে ওই নারীর বিয়ে হলেও স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কারণে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। গত ২ অক্টোবর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এসময় স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার এ ঘটনা দেখে রাত ১০টার দিকে তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহিম নামের নির্যাতনকারী দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে এক জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা